ভাব-সম্প্রসারণ: ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা, সব শিশুরই অন্তরে
৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, ৯ম, ১০ম, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা, সব শিশুরই অন্তরে ভাব-সম্প্রসারণ নিচে দেওয়া হলো:
মূলভাব:
প্রত্যেক শিশুর মধ্যে তার ভবিষ্যতের বীজ লুকিয়ে থাকে। তারা বড় হয়ে যে ধরনের মানুষ হবে, তার ভিত্তি গড়ে ওঠে শৈশবেই। শিশুর সঠিক শিক্ষা, পরিচর্যা ও নৈতিক মূল্যবোধের মাধ্যমে একজন সুনাগরিক তৈরি করা সম্ভব। ভবিষ্যতের সমাজের চালিকাশক্তি আজকের শিশুরাই।
সম্প্রসারিত ভাব:
"একটি শিশুকে ঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারলে, পুরো জাতিকে গড়ে তোলা সম্ভব।" – বিখ্যাত শিক্ষাবিদ জন ডিওয়ির এই উক্তি আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশ কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আজকের শিশুরাই আগামী দিনের নেতৃত্ব দেবে, তাই তাদের শৈশব কেমন কাটছে, সেটি সমাজ ও জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
একটি শিশু জন্মের পর থেকেই পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিকতা দ্বারা প্রভাবিত হয়। যদি সে সঠিক দীক্ষা, নৈতিকতা ও আদর্শের শিক্ষা পায়, তাহলে সে বড় হয়ে একজন সুপ্রতিষ্ঠিত, নৈতিকতাসম্পন্ন ও দায়িত্বশীল মানুষ হতে পারে। কিন্তু যদি তাকে অবহেলা করা হয়, তার শৈশবে সঠিক দিকনির্দেশনা না দেওয়া হয়, তাহলে সে বড় হয়ে দিকভ্রান্ত হতে পারে।
একজন শিক্ষকের ভাষায়, "আমরা যদি আজকের শিশুদের সঠিক শিক্ষা দিতে পারি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই।" অভিভাবক, শিক্ষক এবং সমাজ – প্রত্যেকেরই দায়িত্ব শিশুকে এমনভাবে গড়ে তোলা, যাতে তারা ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর ভূমিকা রাখতে পারে।
আমাদের সমাজে অনেকেই মনে করে শিশুরা শুধুই বড়দের আদেশ মেনে চলার জন্য জন্মায়, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শিশুরাও চিন্তা করতে পারে, তাদেরও আবেগ-অনুভূতি আছে। তাই তাদের স্বাধীনভাবে বিকাশের সুযোগ দিতে হবে। মহান ব্যক্তিদের জীবনী দেখলে বোঝা যায়, তারা শৈশব থেকেই বিশেষ কিছু গুণ অর্জন করেছিলেন যা পরবর্তীতে তাদের সাফল্যের চাবিকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আলবার্ট আইনস্টাইন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম—তাদের প্রতিভা শৈশব থেকেই ফুটে উঠেছিল, এবং সঠিক পরিচর্যা পাওয়ায় তারা বিশ্বজয় করতে পেরেছিলেন।
মন্তব্য:
"শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ," এই কথাটি কেবল একটি প্রচলিত বাক্য নয়, বরং বাস্তব সত্য। প্রতিটি শিশু তার অন্তরে এক সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ বহন করে। আমরা যদি তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে।
তাই, প্রতিটি শিশুর প্রতি যত্নশীল হওয়া, তাদের সঠিক শিক্ষা ও মূল্যবোধ শেখানো আমাদের সকলের দায়িত্ব। একজন শিশুকে শুধুই পড়াশোনায় পারদর্শী করে তোলাই যথেষ্ট নয়, বরং তার ভেতরে সততা, দায়িত্ববোধ, সৃজনশীলতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলি গড়ে তোলাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
একজন মনোবিজ্ঞানী বলেছেন, "একটি জাতির ভবিষ্যৎ দেখতে চাইলে, তাদের শিশুর দিকে তাকাও।" যদি আমরা শিশুদের জন্য সুন্দর একটি পরিবেশ তৈরি করতে পারি, তাদের স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দিতে পারি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎও নিশ্চিতভাবেই সমৃদ্ধ হবে।
আজকের আলোচিত ভাব-সম্প্রসারণ: ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা, সব শিশুরই অন্তরে
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url