দাও ফিরিয়ে সে অরণ্য, লও এ নগর ভাব-সম্প্রসারণ
৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম, ৯ম, ১০ম, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য দাও ফিরিয়ে সে অরণ্য, লও এ নগর ভাব-সম্প্রসারণ নিচে দেওয়া হলো:
দাও ফিরিয়ে সে অরণ্য, লও এ নগর
মূলভাব: অরণ্যের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। এটি সুখে দুঃখে মানুষকে স্নেহের পরশ বুলিয়ে দেয়। অন্যদিকে, অরণ্যহীন নগর রোমান্টিক ও সৃষ্টিশীল মানুষের কাছে এক যন্ত্রণাদায়ক স্থান।
সম্প্রসারিত ভাব: সৃষ্টিলগ্ন থেকেই মানুষ অরণ্যের সান্নিধ্যে জীবন যাপন করে। তখন থেকেই অরণ্য যেন মানুষকে সস্নেহে লালন পালন করার ভার নিজের হাতে নিয়ে নেয়। অরণ্য নানারকম ফুল-ফলসহ বিভিন্ন খাবার-দাবার মানুষকে সরবরাহ করত। মানুষের জীবনধারণের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় যে অক্সিজেন তা মানুষ আর অরণ্যের কাছ থেকেই পেয়ে থাকে। অন্যদিকে, বৃষ্টিপাত সংঘঠনসহ মানুষের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অরণ্যের রয়েছে বিরাট ভূমিকা।
কিন্তু অরণ্যের মহাসমারোহ এখন আর লক্ষ করা যায় না। সভ্যতার ক্রমবিকাশের ফলে মানুষ অরণ্যকে ধ্বংস করে সেখানে নগর-পত্তন করেছে। আবার মানুষ তার গৃহ-নির্মাণ, প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র-নির্মাণ, জ্বালানি সমস্যা সমাধানসহ নানা প্রয়োজনে অরণ্যের প্রধান সম্পদ বৃক্ষকে অকাতরে নিধন করছে। ফলে মানুষের জীবন প্রক্রিয়াও আজ বিপন্ন হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে, অরণ্য প্রকৃতিকে ধ্বংস করে মানুষ যে নগরের পত্তন করেছে সে নগর মানুষকে সুখ দিতে পারছে না। প্রয়োজনীয় সুযোগের অভাবে এখানে অনেক মানুষের সুপ্ত বাসনা ও সৃষ্টিশীলতার অকাল মৃত্যু ঘটে।
এখানে অন্যের দুঃখের কথা শোনার কারো সময় নেই। পারস্পরিক স্নেহ-মমতা, সহমর্মিতা, সংবেদনশীলতা, আন্তরিকতা এসব যেন এখানে একেবারেই অনুপস্থিত; যেটুকু আছে তাও যেন কৃত্রিমতার আবরণে আচ্ছাদিত। এখানকার মানুষগুলোও কেমন যেন যান্ত্রিক স্বভাবের। এ কারণেই বোধ হয় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপলব্ধি__ “ইটের পর ইট মাঝে মানুষ কীট” ।
মন্তব্য: মানুষের জীবনে অরণ্যের প্রয়োজনীয়তা বহুমাত্রিক। তাই “দাও ফিরে এসে অরণ্য, লও এই নগর”- এ আহবান আজ আর কেবল কোনো রোমান্টিক বা সৃষ্টিশীল মানুষের নয় এটি আজ সব সচেতন মানুষেরই প্রাণের দাবি।
আজকের আলোচিত ভাব-সম্প্রসারণ: দাও ফিরিয়ে সে অরণ্য, লও এ নগর
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url